মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধাঁরে ও সকালে দিন দুপুরে আম বাগান উজাড় করে এবং ফসলি জমিতে পুকুর খননে এক শ্রেণীর অসাধু রাজনৈতিক নেতাদের হিড়িক দেখা যাচ্ছে। দিন দিন এসব অবৈধ পুকুর খননকারিদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছে ফসলি জমির মালিকরা।
বিভিন্ন সময় তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে গেলে উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে এসব অবৈধ পুকুর খননকারীরা বলে দাবি করছে উপজেলা প্রশাসন। এতে উপজেলা প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন নিয়মিত মামলা না করায় অবৈধ পুকুর খননকারিদের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
এতে করে আইনের ফাঁকফোঁকড় দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন তারা। বাঘা উপজেলার চিহ্নিত রাজনৈতিক নেতার সাঙ্গপাঙ্গরা দিন দিন এসব কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। বেপরোয়াভাবে তারা অবৈধ উপায়ে আম বাগান কেটে ও ৩ ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন। পুকুর খননকারিদের দৌরাত্ম্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অসহায় হয়ে পরেছে ফসলি জমির মালিকেরা। উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে পুকুর খননের সবচেয়ে পছন্দের তালিকায় রয়েছে বাজুবাঘা, মনিগ্রাম, আড়ানী ও বাউসা ইউনিয়ন। মনিগ্রাম, আড়ানী ও বাসা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৮/১০ টি পুকুর খনন চলমান রয়েছে। এযাবৎ যতগুলো পুকুর খনন করা হয়েছে তার বেশির ভাগই খনন হয়েছে এই ৩ টি ইউনিয়নে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় বাঘা উপজেলায় ফসলি জমির অভাব দেখা দিবে বলে সচেতন মহলের মানুষ জানিয়েছেন। বাধ্য হয়ে ফসলি জমির মালিকরা পুকুর খনন বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও বাঘা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকেন। রবিবার (৩ মার্চ) বিকেলে উপজেলা মনিগ্রাম বলিহার হিন্দু পাড়া মাঠে ও বাউসা ইউনিয়নের আড়পাড়া বড়বিলে,কামার পড়া শিকদার মাঠে আম বাগান উজাড় করে এবং ৩ ফসলি ফসলি জমিতে পুকুর খননের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়।
কামাড়পাড়ার শিকদার গ্রামের মাঠে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক রফিকুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমন সমতল উর্বরতা ৩ ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা দেখে আমার বুক ফেটে যাচ্ছে। জমির মালিকরা ও কিছু নেতা প্রভাবশালী হওয়াতে আমরা গরীব মানুষ কিছুই করতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, আমাদের তিন ফসলি ভুট্টার জমিতে জোর পূর্বক পুকুর খনন করছে প্রভাবশালী একটি মহল। তাদের বিরুদ্ধে কোন রূপ ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব না। ইউএনও স্যার এই পুকুর খনন বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তিনি।
এবিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, আইন প্রয়োগ করে পুকুর খনন বন্ধ করা যাচ্ছেনা। এর জন্য দরকার জনসচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্ঠা। সবাই সচেতন হলেই পুকুর খনন বন্ধ করা সম্ভব বলে এ কর্মকর্তা জানান।