কক্সবাজারে স্বাস্থ্য খাত সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য রোধে প্রতিবাদ সভা

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য খাত সিন্ডিকেটের নৈরাজ্য রোধে প্রতিবাদ সভা সংযোক্ত ছবি

জামাল উদ্দীন – কক্সবাজার

সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত। সিন্ডিকেটটির ইশারায় চলে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান সহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতাল- ক্লিনিকগুলোও চলে তাদের ইশারায়। তাদের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটলেই নেমে আসে বদলিসহ বিভিন্ন হয়রানি। এমনকি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোও তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এসব নিয়ে কক্সবাজারের স্বাস্থ্য খাতে চলছে চরম নৈরাজ্য। এতে চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে সিন্ডিকেটটির হাতে ভুল চিকিৎসা ও নানা অনিয়মের শিকার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে ডাঃ মাহবুবুর রহমান, ডাঃ খায়রুন্নেছা মুন্নী, ডাঃ জিন্নাতুন্নেছা, ডাঃ

মনজুর হোসেনের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। সিন্ডিকেটটির ইশারায় চলছে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান সহ বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি। স্বার্থের ব্যাঘাত ঘটলেই ভালো চিকিৎসকদের বদলি করে দেয়া হয়। ইতিমধ্যেই ডাঃ অরূপ দত্ত বাপ্পি, ডাঃ হাসিবুল সাত্তার ডাঃ কপিল উদ্দিন, ডাঃ ওসমানুর রশিদ সহ বেশ কয়েকজনকে বদলি করা হয়েছে। ভালো চিকিৎসকদের কক্সবাজারে থাকতে দেয়া হয়না। অপরদিকে ভুল ও অপচিকিৎসার অভিযোগ থাকা ডাঃ খায়রুন্নেছা মুন্নী গং রয়েছেন বহাল তবিয়তে। বেসরকারি হাসপাতাল- ক্লিনিকগুলোতে খবরদারি করতে ডাঃ খায়রুন্নেছা মুন্নী সরকারি চাকরি ছেড়েছেন। তাঁর বোন ডাঃ জিন্নাতুন্নেছা, বোনের স্বামী ডাঃ মনজুর হোসেন পারিবারিক সিন্ডিকেট তৈরি করে স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন। ডাঃ মুন্নীর বোনের স্বামী নিজেকে দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তির আত্মীয় পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সিন্ডিকেটটির কারণে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু হচ্ছে না। পারিবারিক সিন্ডিকেটটির শিকার হয়েছে কক্সবাজারের আধুনিক মানের ইউনিয়ন হাসপাতালও। আধুনিক মানের বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে উন্নত স্বাস্থ্য সেবায় এগিয়ে থাকা ইউনিয়ন হাসপাতালকে টার্গেট করে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ এবং অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু রোগীদের টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়া হয়েছে। অথচ ক্যান্সার রোগীদের জন্য কক্সবাজারে একমাত্র ইউনিয়ন হাসপাতাল ক্যামো থেরাপি সার্ভিস, ডায়ালাইসিস সেবা এবং আইসিইউ সার্ভিস চালু করেছে। স্বাস্থ্য খাতে ইউনিয়ন হাসপাতালের এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপ ইর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সিন্ডিকেটটির। পারিবারিক সিন্ডিকেটটি কক্সবাজারে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখতে অপচেষ্টা করছে। ডাঃ খায়রুন্নেছা মুন্নীর হাতে অসংখ্য মানুষ ভুল এবং অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে। নরমাল ডেলিভারিতে নিরুৎসাহিত করে সিজারিয়ান অপারেশনের নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এমনকি ৩/৪ মাস আগেও তার ভুল চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যু হয়। এছাড়া তার হাতে হয়রানির শিকার অসংখ্য ভুক্তভোগী রয়েছে। ভূক্তভোগী — বলেন, আরেক ভুক্তভোগী পেশকারপাড়ার মাফিয়া বলেন,

আমরা কক্সবাজারবাসী কক্সবাজার জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন শেখ বলেন, স্বাস্থ্যখাত নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে জনগণ মূখে থুথু মারার অবস্থা হয়েছে। তারা চাই অনৈতিক সুবিধা ভোগ করতে এসব ষড়যন্ত্র করে ক্লিনিকগুলোকে বন্ধ করতে। তারা এসব করে কক্সবাজারের স্বাস্থ্যসেবাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চাই। কিন্তু তা হতে দেয়া যাবেনা।

ভুক্তভোগী আমরা কক্সবাজারবসীর শহর শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি শহীদুল্লা মেম্বার বলেন, কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সিকিৎসা সেবা নামে ভন্ডামি ছাড়া কিছু না। আমি নিজেই এজন ভুক্তভোগী। আমাকে সদর হাসপাতাল থেকে এনে ইউনিয়ন হাসপাতালে স্বল্প মূল্যে উন্নত সিকিৎসা দিয়েছে। ইউনিয়ন হাসপাতালসহ একাধিক হাসপাতালে অভিযানের নামে ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া যায় না। এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এদিকে কমরেড মুক্তিযুদ্ধা সমীর পাল বলেন, সদর হাসপাতালে কোন চিকিৎসা না থাকায় জনগণ প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু সেটি নিয়ে যদি কেউ ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে চাই তাহলে এটা এধরণের অনৈতিক চিন্তাধারা।

আমরা কক্সবাজারবাসীর পক্ষের সহ সভাপতি নাজিম উদ্দীন বলেন, কক্সবাজারে ডাক্তারদের কিছু অংশ ইউনিয়ন হাসপাতাল নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে। নানা অনিয়মের নামে ভুঁয়া তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র করা হলে কক্সবাজারের আপামর জনসাধারণ রাস্তায় নেমে যামে। তখন পালনোর সময় পাবেননা বলে কঠিন হুশিয়ারী দেন।

এদিকে একইবাবে আমরা কক্সবাজারবাসীর শহর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল রিফাতও এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানান।

এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী হুংকার দিয়ে বলেন, ইউনিয়ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা বন্ধ করতে হবে। যদি তা না করেন তাহলে কঠিন আন্দোলনে যাব। এদিকে সমস্ত অনিয়মের জন্য কঠিনভাবে পদক্ষেপ নিব আমরা কক্সবাজারবাসীসহ মুক্তিযুদ্ধারা।

এদিকে উপস্থিত আমরা কক্সবাজারবাসীসহ সকল ধরনের জনগণ সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে জোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *