ছাত্রলীগের হামলার শিকার উর্মির বিচার চেয়ে ববিতে বিক্ষোভ

ববি প্রতিনিধি

ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়া জান্নাতুল নওরীন উর্মির বিচার চেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।এসময় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।একইসাথে উপাচার্য বরাবর বিচারের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।জান্নাতুল নওরীন উর্মি ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

নওরিন উর্মী জানান, ২০২০ সালের ১লা মার্চ হত্যার উদ্দেশ্যে আমার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।পরীক্ষা দেওয়ার পরে আমাকে মুখোশধারী কয়েকজন পিছন থেকে মাথায় আঘাত করে।পরে আমার শরীরে নানা জায়গায় কাটাকম্পাস দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করা হয়।রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে এক আওয়ামী শিক্ষক সহ ছাত্রলীগ কর্মীরা আমার উপর এ হামলা করে।সেইসময় আওয়ামী সরকার ক্ষমতা থাকায় সুষ্ঠু বিচার পাইনি।এখন আমি এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি।

প্রতিবাদ সমাবেশে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী  মোঃ ইমরান বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষার্থীকে হত্যার উদ্দেশ্য যে বর্বরোচিত হামলা ও নির্যাতন চালায় আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।সেইসময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে বিচার চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিচার কিংবা তদন্ত করেনি।কিন্তু এখন দেশের ছাত্রজনতা সোচ্চার হয়েছে এবং তাদের অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। এখন প্রশাসন কারো পক্ষপাতী হয়ে সত্য ঘটনা ধামাচাপা দিতে পারবে না।সুতরাং অবিলম্বে এই নৃশংস হামলার বিচার হবে বলে আশাকরি। 

জানা যায়, উর্মি ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক।যারা হামলায় জড়িত ছিলেন তারা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্রলীগের সাথে জড়িত।রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাকে (উর্মি) হামলার শিকার হতে হয়েছে বলে জানা যায়।এ নিয়ে বেশ কয়েকটি জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।সেইসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ভুক্তভোগী হামলার বিচার দাবি করেন।জড়িতরা আওয়ামী লীগের শিক্ষক  ও ছাত্রলীগের কর্মী হওয়ায় বিচার পাননি বলে ভুক্তভোগী জানান। 

২০২০ সালের ১১ মার্চ দোষীদের বিচার চেয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক সুজিত বালাকে প্রধান আসামী করে ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রলীগ আলিম সালেহী,একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম,ষষ্ঠ ব্যাচের আবদুল্লাহ ফিরোজ,পঞ্চম ব্যাচের হাফিজ ও আসাদুজ্জামান আসাদ।

এদিকে ২০২৪ সালের ১৩ আগস্টে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে ৫ দফা দাবি দিয়ে তিনদিনের সময় নির্ধারণ করে দেয় শিক্ষার্থীরা।দাবিগুলো হল- অবিলম্বে এই  ন্যাক্কারজনক হামলার তদন্ত পুনরায় শুরু, মূল হোতা সুজিত বালার চাকরিচ্যুতি ও গ্রেফতার।ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সার্টিফিকেট বাতিল ও গ্রেফতার,এই ঘটনার সামনে পিছনের ক্রীড়ানকদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করতে হবে। আগামী ০৭ দিনের মধ্যে  বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সমূহকে এই ঘটনায় দৃশ্যমান কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ভূমিকার কথাও জানায় তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *