মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
রাজশাহীতে প্রবাসীর বাড়ির মূল ফটক ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে তা দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসময় ভুক্তভোগীদের ৫টি মোবাইল ফোন ভাঙচুর ও ৩টি ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। লুট করা হয়েছে বাড়ির জিনিসপত্রও। এছাড়া স্বর্ণের চেইট, ডায়মন্ডের লকেট ও স্বর্ণের আংটিও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
গত রবিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর কাজলা ফুলতলা এলাকায় এই হামলা, ভাঙচুর, বাড়ি দখল ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নগরীর কাজলা ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী প্রবাসী মো. আল-আমিন জুয়েল এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জুয়েল জানান, গত ২০ আগস্ট প্রবাসী তিনি বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে একই এলাকার অভিযুক্ত মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. মিঠুন ও মৃত সিদ্দিকের ছেলে মো. রাজু কোন কারণ ছাড়াই তার স্ত্রী শিমু আক্তারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। এ ঘটনায় ওই দিনই নগরীর মতিহার থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কাজলা ফুলতলা এলাকার মৃত বদলরুল আলমের ছেলে ফাইজুল আলম পলাশ ও মো. পরশ, মৃত সাবানের ছেলে মো. হানিফ শেখ ও মো. হানিফ, মৃত রুহুল আমিনের ছেলে রোকন, হায়দার আলীর ছেলে শিমুল, মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মাহাবুল, মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. মিঠুন, মৃত সিদ্দিকের ছেলে মো. রাজু ও মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. আব্দুল গাফফারসহ আরো ৫-৭ জন তার বাসার প্রধান ফটক ভেঙ্গে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তারা (অভিযুক্তরা) বাসার বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর ও বাড়ির জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। তখন তাদের (ভুক্তভোগীদের) ৫টি মোবাইল ফোন ভাঙচুর ও ৩টি ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। লুট করা হয় বাড়ির জিনিসপত্রও। এছাড়া স্বর্ণের চেইট, ডায়মন্ডের লকেট ও স্বর্ণের আংটিও ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীর। এরপর তারা প্রবাসী জুয়েলসহ পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেককে আলাদা রুমে নিয়ে গিয়ে জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে সবাইকে জোরপূর্বক এক কাপড়ে (শুধু পড়নের কাপড়সহ) বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সেটি দখলে নেয়। তাদের অত্যাচার থেকে প্রবাসী জুয়েলের ১৬ ও ৭ বছরের দুই মেয়েও রক্ষা পায়নি। এ ঘটনায় গত সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে মতিহার থানায় হামলা ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রী শিমু আক্তার একটি অভিযোগ দায়ের করে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, গত দুই দিন থেকে তারা বাড়িতে ঢুকতে না পেরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি।’ এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তবে কি কারনে অভিযুক্তরা তাদের বাড়ি দখল করে নিয়েছে তা জানা যায়নি। খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী জুয়েল এর স্ত্রী মোছা. শিমু আক্তার, কন্যা জারিন আখতার জুথি, মৌসুফা আফরিন ও শালিকা মোসা. নাজমুন নাহার লাভলী উপস্থিত ছিলেন।