মোঃআব্দুল হামিদ (মেহেরপুর)প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বালিয়াঘাট মধ্য পাড়া মাঠে সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ রহিদুল ইসলামের ১২ বিঘা জমির কলার ক্ষেত কেটে তসরুপাত করেছে দুর্বৃত্তরা।
গত বৃহস্পতিবার রাতের কোন এক সময় দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।এতে ঐ কৃষকের আনুমানিক প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কলা চাষি।এর ঠিক ১ মাস আগেও ৫ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তছরুপাত করে দুর্বৃত্তরা।এতে চরম হতাশায় পড়েন চাষি রহিদুল ইসলাম।
এলাকাবাসীরা জানান, মানুষের সাথে মানুষের শত্রুতা থাকতে পারে কিন্তু মানুষের সাথে ফসলের শত্রুতা মেনে নেওয়া যায় না।এখন কলার অনেক দাম।
এটা চাষিদের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। এই ক্ষতির খেসারত কে দেবে? যারা এই কাজ করেছে তাদের দ্রুত বিচার হওয়া দরকার।দোষীদের সনাক্ত করে সর্বোচ্চ দাবি করছি প্রশাসনের কাছে।একজন চাষীর ১৭ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তছরুপাত করলে সেই চাষির আর কি থাকে।
স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন,এঘটনায় কৃষকরা শঙ্কায় আছে কখন দুর্বৃত্তরা অন্যদের ফসল কেটে দেয়।যারা এই জঘন্য কাজ করেছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।এর আগের ঘটনায় প্রশাসন কোনো দূর্বৃত্তদের ধরতে না পারায় হতাশ আমরা।
জমির মালিক দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের ১২ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ সাজাহান আলী বলেন, আমার বালিয়াঘাট মাঠে কলার আবাদ রয়েছে।গত একমাসে আগে রাতের আঁধারে কে বা কাহারা আমার ৫ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তসরুপাত করেছিল জানিনা।সেই ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি।এক মাস পর আবার একই ঘটনা ঘটালো দুর্বৃত্তরা।প্রশাসনের কাছে দুহাত জোড়ে মিনতি করি দুর্বৃত্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োগ করা হোক।
জমির মালিক সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ রহিদুল ইসলাম বলেন, বালিয়াঘাট মাঠে আমার ১৭ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।এতে আমার প্রায় আনুমানিক ১৮ থেকে ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।জমিগুলো আমার লিজ নেয়া।বিভিন্ন জায়গা থেকে লোন ও ধারদেনা করে জমিগুলো নিয়েছি।প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি দোষীদের সনাক্ত করে দ্রুত আইনে আওতায় আনার জন্য।তাদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক জাতে আর কেউ এই ধরনের কাজ না করতে পারে।
তিনি আরও বলেন,গত এক মাস আগেও আমার ৫ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তছরুপাত করেছিল দুর্বৃত্তরা। আমি প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু এখনো কেউ ধরা পড়েনি।প্রশাসনে কাছে যেতে ইচ্ছা করছে না।তারপরও আমি আবার প্রশাসনের কাছে যাব অভিযোগ দেব।
মোঃ রহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই জামান আলী বলেন, এর আগে কলা গাছ কেটে তছরুপাত করেছিল সে বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছিলাম প্রশাসনের নিকট কিন্তু প্রশাসনের নিকট থেকে আশানুরূপ কোন ফলাফল আমরা পাইনি।প্রশাসনে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি এতে আমরা হতাশ।আবারো ১২ বিঘা জমির কলা গাছ কেটে তছরুপাত করেছে।আমরা কার কাছে যাব কার কাছে গেলে বিচার পাব আমাদের বুকে তো মাটি ঠেকে গেছে।
বামন্দী ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল জানান,মানুষের সাথে মানুষের শত্রুতা থাকতে পারে সেটা ফসলের ওপরে গিয়ে কেন প্রভাব পড়বে, এটা কখনো কাম্য নয়। যারা এ ধরনের ঘৃণ্যতম ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরান হোসেনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
গাংনী থানার ওসি তদন্ত মনোজিত কুমার নন্দী জানান, কলা গাছ কেটে তছরুপাতের ঘটনা শুনেছি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।এর আগের ঘটনায় থানায় অভিযোগ রয়েছে।দুর্বৃত্তদের ধরার জন্য প্রশাসন জোরালোভাবে মাঠে কাজ করছে। দুর্বৃত্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।