জামাল উদ্দীন – কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদীর ওপারে মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত চলছে। নাফনদীর টেকনাফের জালিয়ারদিয়া খুব নিকটবর্তী পূর্ব পাশে অবস্থিত লালদিয়া নামের চরটি মিয়ানমার জলসীমানায়।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টা থেকে শুরু হওয়া গোলাগুলি বিকাল ৩ টা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। দুই পক্ষের গোলাগুলির ঘটনায় ইতিমধ্যে গুলি এসে পড়েঠে টেকনাফ স্থলবন্দরের কার্যালয়, একটি পন্যবাহি ট্রাক ও স্থানীয় এক ব্যক্তির বসত ঘরে। এতে টেকনাফের স্থল বন্দর সহ দমদমিয়া এলাকা গুলির অব্যাহত শব্দ স্থানীয়দের মধ্যে আতংক তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বন্দর কর্তৃপক্ষ সহ স্থানীয় লোকজন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন, লালদিয়া চরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আরএসও কে হঠিয়ে আরকান আর্মি চরটি নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। এর জন্য গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) একবার গোলাগুলি হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় আজ বুধবার আবারও সংঘাত চলছে।
হ্নীলা ইউনিয়নের ৯নং ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে গুলির শব্দ কাঁপছে দমদমিয়া এলাকা সহ বন্দর এলাকা। ইতিমধ্যে সংঘাতে ছোঁড়া গুলি দমদমিয়ার আয়ুব নামের এক ব্যক্তির বসত বাড়িতে এসে পড়েছে। বাড়িটির জানালা, ঘরের ভেতরের আলমিলা ভেঙে গেছে। বন্দরেও কয়েকটি গুলি এসে পড়েছে।
স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেড টেকনাফের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, দুপুরে কার্যালয়ে অবস্থান করার সময় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পায়। এক পর্যায়ে কার্যালয়ের জানালায় এসে গুলি লাগে। জানালা ভেঙ্গে যায়। এসময় বন্দর পণ্য বোঝাইকারি একটি ট্রাকের কাঁচে গুলি লেগে ভেঙে গেছে।
তিনি বলেন, এর আগে বুধ-বৃহস্পতিবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। গোলাগুলির শব্দের কারণে সকলেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। এতে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ আছে।
“লাল দিয়া”নামক স্থানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৯নং ওযার্ডের ইউপি সদস্য নজির আহমদ।
ইউপি সদস্য নজির আহমদ বলেন, দীঘদিন ধরে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) লালদিয়ায় অবস্থান করে আসছিল। তাদেরকে লালদিয়া ছেড়ে চলে যেতে সময় বেঁধে দেওয়ায় হয়। কিন্তু আরএসও লালদিয়ার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে না দেওয়ায় মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি হামলা করেছে। এতে উভয়পক্ষে ব্যাপক গোলাগুলিতে হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণে টেকনাফ সীমান্তের স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) মো: আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার বেলা ১২ টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী গোষ্টির মধ্যে সংঘাতের জেরে ছোঁড়া কয়েকটি গুলি টেকনাফ স্থলবন্দর পড়েছে।
স্থানীয়দের কাছে থেকে ঘটনাটি শোনার পর বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি