ঝিনাইদহে রাতে- দিনে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির রমরমা ব্যবসা,নিরব ভুমিকায় প্রশাসন

আল মামুন, জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ।

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ও কালীগঞ্জে অনুমতি না নিয়ে রমরমা রাতে- দিনে মাটির ব্যবসা করছে মাটি ব্যবসায়িরা।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় ছোট সিমলা ও সুন্দর গ্রামের ভিতর কিছু মাটি ব্যবসায়ী অসাধু ব্যক্তিরা রাতে -দিনে অবৈধ যন্ত্রদানব ভেকু দিয়ে আবাদি জমি খনন করে ট্রলি ট্রাক্টরে বহন করে ইট ভাটায় বিক্রি করছে। এতে গ্রামের রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশ দুষণে বাড়ছে শিশু সহ বয়স্কদের রোগব্যাধি।
এছাড়া হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাতব্রিজ বাজারের পাশে ০৩ একর ৪৪ শতক ডোবা ও ধানী জমিতে রামনগর গ্রামের আবুল হোসেন পুকুর খনন করে পুকুরের পাড় বাঁধার অনুমতির জন্য আবেদন করেন রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর তানভির হাসান তুরান-এর বরাবর। সেই আলোকে ২৩দফা শর্ত স্বাপেক্ষে প্রশাসন পুকুর খননের অনুমতি দেয়। কিন্তু অনুমতি পাওয়ার সাথে সাথে সকল শর্ত ভঙ্গ করে উপজেলার হরিশপুর গ্রামের বসির উদ্দীন নামে এক মাটি ব্যবসায়ির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভাবে মাটি বিক্রি শুরু করেছে।উপজেলার হরিশপুর,জোড়াদহসহ বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি প্রতি ১৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে মাটি।মাটিটানার কাজে নিয়োজিত ট্রাক্টর রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আর আতংকের বিষয় অধিকাংশ গাড়ির চালকই কিশোর। তার মাটির গাড়ি চলাচলে স্থানীয় পথচারি ও ছাত্রছাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন শতাধিক মাটির ট্রাক্টর রাস্তায় চলাচল করায় রাস্তাভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে।মাটি পরিবহনের সময় গাড়ি থেকে রাস্তায় যে মাটি পড়ছে তা একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক দূর্ঘটনার ঝুকি বাড়াবে।দিনভর ধরে চলে এই মাটির ট্রাক্টর।
খোজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার ফলসী, সড়াতলা,পায়রাডাঙ্গা, কালাপাড়িয়াসহ একাধিক এলাকায় চলছে মাটি কাটার এই রমরমা ব্যবসা। উপজেলা প্রশাসনের নিরব ভূমিকা মাটিকাটা সিন্ডিকেটকে লাগামহীন করে তুলেছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ,উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার ভূমি এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকবার অবহিত করলেও অজানা কারণে তারা এব্যাপারে কোন পদক্ষেপই নেননা।
দীর্ঘদিন ধরে এই মাটি কাটার কারণে জনগন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এর বিরুদ্ধে তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আক্তারুজ্জামান বলেন জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে তাদের পুকুর খননের অনুমতি আছে তবে শর্ত ভঙ্গ করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

সহকারী কমিশনার ভূমি নিরুপমা রায়কে বার বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি,পরে তার অফিসে গিয়ে অবহিত করলে তিনি বলেন,জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাকে পুকুর খননের অনুমতি দিয়েছে।যেহেতু ওই পুকুর থেকে অনেক মাটি হবে তাই পুকুর মালিক তার নিজের অন্য কোনো পুকুর ভরাট করতে পারবে কিন্তু মাটি বিক্রি করতে পারবেনা।মাটি বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্য দিলে তিনি সাংবাদিকদের ঘটনা স্থলের ছবি দিতে বলেন। তারপর ঘটনাস্থলের ছবি এবং মাটি বিক্রির লেনদেনের ভিডিও চিত্র দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

জানাযায় সহকারি কমিশনার ভূমি ফলসী ইউনিয়ন ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করেন।

এদিকে হরিণাকুণ্ডু পৌরসভা ও ফলসী ইউনিয়ন ভুমি উপসহকারী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি কাটা এবং বিক্রির ঘটনা জেনে আসার পরেও আইনানুগ কোন ব্যবস্থা নেননি।বরং মাটি বিক্রির এই সিন্ডিকেটের সাথে তিনি সুসম্পর্ক রেখে চলেন বলে একাধিক অভিযোগ আছে।
এব্যাপারে উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন,আমি আমার উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।তিনি ব্যবস্থা না নিলে আমার কিছু করার নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *