শহিদুল ইসলাম ,রংপুর প্রতিনিধি
প্রেসক্লাব,রংপুরের অনুনোমোদিত কমিটি কর্তৃক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ সমাজসেবা অধিদপ্তর রংপুর জেলার উপ-পরিচালক সহ তদন্ত কমিটিকে আদালতের মাধ্যমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রংপরের গনমাধ্যম কর্মীরা। পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশন অধ্যাদেশ ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অবিলম্বে প্রেসক্লাব,রংপুরে প্রশাসক নিয়োগ অথবা তত্বাবধায়ক কমিটি গঠনের দাবী জা বৈষম্যমুক্ত সাংবাদিক আন্দোলন সহ স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে রংপুরে কর্মরত অধিকার বঞ্চিত সাংবাদিকরা।
অন্যদিকে, আন্দোলন দমাতে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন এর প্রধান সমন্বয়ক সাংবাদিক এস.এম জাকির হুসাইন, এনামুল হক স্বাধীন ও শরিফা বেগম শিউলীর নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেছে প্রেসক্লাব,রংপুরের অনুনোমোদিত কমিটির সাধারন সম্পাদক ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের ২নং সদস্য মেরিনা লাভলী। প্রেসক্লাব,রংপুরের এ সকল অনৈতিক কর্মকা- ও অধিকার বঞ্চিত গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, তদন্তে বাধা, নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কারন দর্শানোর নোটিশ সহ সার্বিক কর্মকান্ডে বিস্ময় প্রকাশ করেছে রংপুরের সচেতন মহল।
এদিকে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে অনেক অনৈতিক কর্মকা-। প্রেসক্লাব,রংপুর প্রতিষ্ঠা পায় ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে। এরপর ১৯৮৯ সালে এরশাদ সরকারের আমলে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত ৩৪ শতক সম্পত্তি নামমাত্র মুল্যে রংপুর জেলার সম্পাদক প্রকাশক ও কর্মরত সাংবাদিকদের কল্যান, মানোন্নয়নে বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৯৯১ সালে সমাজসেবা জেলা কার্যালয় হতে নিবন্ধন নেয় সংগঠনটি। নিবন্ধন সাল হতে প্রতি বছর আয়-ব্যয়, নির্বাচিত কমিটির অনুমোদন, গঠনতন্ত্র সংশোধনের পর তা অনুমোদন কোনটিই প্রতিপালন করেনি প্রেসক্লাব,রংপুর। অপরদিকে যাবতীয় দেখভাল, তদারকির দায়িত্ব নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের থাকার কারনে ২০০৯ সালে নিস্ক্রিয়র তালিকায় এই ক্লাবকে অন্তর্ভুক্ত করে মন্ত্রণালয়েও পাঠিয়ে দেয়া হয় তথ্য। এর পরেও প্রেসক্লাব রংপুর কোন ভুমিকা না রেখে একাধিকবার গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে অনুনোমোদিত গঠনতন্ত্রে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। ফলে ৩৩ বছরে সংগঠনটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সরকারি সাহায্য,অনুদান, বিভিন্নভাবে পাওয়া অর্থ ও সম্পদ এখনও আত্মসাৎ অব্যাহত রেখেছে।। শুধু তাই নয়, বরং প্রেসক্লাব কমপ্লেক্স নির্মানে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ ৫কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক, রংপুরকে নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান করে এর নির্মাণ শুরু হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকারের সচিব আরও ১ কোটি ২০ লাখ, সড়ক ও জনপথ রংপুর থেকে ৮৯ লাখ এবং জেলা পরিষদ থেকে মোটা অংকের অনুদান প্রাপ্ত হয়। পরে কৌশলে জেলা প্রশাসককে বাদ করে দেন। এলজিইডির কারিগরি সহায়তায় কমপ্লেক্সটিতে প্রায় ৪শ দোকান তৈরি করে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার ৫৯বছরে এবং নিবন্ধন অনুযায়ী ৩৩ বছরে সদস্য সংখ্যা মাত্র ৩২ জন। এ সুযোগে কমপ্লেক্সের সাড়ে ৩শ দোকান বিক্রি করে সমুদয় টাকা ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করে। জেলার বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক ও কর্মরত ২শ’র বেশি সাংবাদিককে বঞ্চিত রাখে। এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে যারাই প্রতিবাদ প্রতিকার চেয়ে সরকারি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে লিখিত অভিযোগ করলে তাদের ওপর নেমে আসে ষড়যন্ত্র, হামলা ও মিথ্যা মামলা সহ অন্যায় অবাঞ্চিতের ঘটনা। এসব বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করলে বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলন নামের সংগঠনটি প্রেসক্লাব,রংপুরের বৈষম্য দূর করতে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় সিনিয়র তথ্য ও সম্প্রচার, জেলা প্রশাসক, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও বিভাগীয় পরিচালকসহ অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অবগতি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ে আসে। এ ব্যপারে প্রেসক্লাব,রংপুরের নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ সমাজসেবা জেলা কার্যালয়,রংপুরের উপ-পরিচালক আব্দুল মতিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নিবন্ধন তো আমার সময়ে হয়নি। দেখতে হবে কি অবস্থায় আছে। পরে জানান, এটি নিবন্ধন নেয়ার পর আমাদের কররই সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর বর্তমান কমিটির অনুমোদন চায় প্রেসক্লাবের তথাকথিত অবৈধ কমিটি। এতে বিষ্ময় প্রকাশ করে নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ। ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পত্র দিলে গায়ে আগুন ধরে বর্তমান ফ্যাসিস্ট কমিটির। অনুমোদন না দেয়ায় এবং প্রেসক্লাবের তদন্ত করতে চেয়ে নোটিশ করায় গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাবের অবৈধ চক্রটি নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক সহ তদন্ত কমিটিকে আদালতের মাধ্যমে অস্থায়ী নিষধাজ্ঞা চেয়ে কারন দর্শানোর নোটিশ করে। এ ব্যাপারে প্রবেশন অফিসার নজরুল বলেন, ওরা ওদের গঠনতন্ত্র মানবেনা আবার জবাব দিহিও করবেনা। আমরা তদন্ত কমিটি করলাম। তদন্ত আমাদের তথা রেজিষ্ট্রেশন কর্তৃপক্ষের করার এখতিয়ার আছে। আদালতের মাধ্যমে আটকে দেয়ায় আমরা অসস্থি বোধ করছি। প্রশাসক নিয়োগ করে অথবা তত্বাবধায়ক কমিটি করে চিরতরে বৈষম্যমুক্ত প্রেসক্লাব রংপুর গঠনের দাবী রংপুরের সম্পাদক ও কর্মরত অধিকার বঞ্চিত সাংবাদিকদের।