ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি।
১৭ টি গরু পালনকারী খামারীর গোয়ালের সবথেকে বড় ফ্রিজিয়ান জাতের সাদা কালো রঙের ষাড় গরুটি ভুয়া চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় জবাই করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে প্রায় ৯ মণ ওজনের ষাড় গরুটি স্থানীয় গ্রামবাসীর অনেকে ৭ শত টাকা কেজি দরে খাবার জন্য কেনেন। এমন এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নের বাদুরগাছা গ্রামের মোঃ ওমর আলীর ছেলে খামারী সাইফুল ইসলামের সাথে।
ভুক্তভোগী খামারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আমার খামারে মোট ১৭টি গরু আছে। এর মধ্যে ৮ টি ষাড় গরু। আর এই ফ্রিজিয়ান ষাড়টি আমি ৫ মাস আগে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করি। ২৬ শে ফেব্রæয়ারি আমার সুস্থ্য ষাড় গরুটি হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়।
সে সময় আমি সাকো বাজারের পশু চিকিৎসক মোঃ আলী হুসাইন কে দেখায়। উনি আমার গরুর চিকিৎসা দেন।এর পরের দিন গরুটির পেট ফেপে উঠে। পশু চিকিৎসক হুসাইন গরুর পেট ছিদ্র করে গ্যাস বের করেন এবং বিভিন্ন পদের ঔষধ দেয়। এর মধ্যে এমক্সিসিলিন ও সেফট্রিক্সসন নামের এন্টিবায়োটিক ঔষধও দেন তিনি। কোন কিছুতেই কাজ হয় না বরং গরু আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরের পর গরুটি ছটফট করতে থাকলে আমি উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাকে ফোনে সব খুলে বলি।
তিনি মিটিংএ থাকায় তৎক্ষনিক তার প্রতিনিধিকে পাঠান। তিনি গরু দেখে গরুর সুস্থ্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেন না। এমতাবস্থায় আমি ক্ষতি কমাতে গরু জবাই করে দেই। মূলত চিকিৎসক আলী হুসাইনের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার সখের গরুটিকে আমি ধরে রাখতে পারলাম না। সোনালীডাঙ্গা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন,সাইফুলের তরতাজা গরুটি শুধুমাত্র ভুল চিকিৎসার কারণে এই অবস্থা হলো। ঐ গরুর মাংস আমিও কিনেছি খাওয়ার জন্য।পশু চিকিৎসক না হয়ে যারা অপচিকিৎসা প্রদান করে খামারীর ক্ষতি করছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিৎ। সনদবিহীন পশু চিকিৎসক আলী হুসাইন বলেন,আমি সাইফুল ভাইয়ের গরুটি চিকিৎসা দিয়েছি। পশু চিকিৎসায় আমি কোন রেজিস্টার ডাক্তার নয়। পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করি শুধু।
সাইফুল ভাইয়ের গরু স্ট্রোক জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। উনি কি আমার নামে লিখিত অভিযোগ করেছে?উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রেজাউল ইসলাম সনদবিহীন ভুয়া চিকিৎসকের অপচিকিৎসার ব্যাপারে বলেন,ঐ খামারী শেষ পর্যায়ে আমাকে জানিয়েছেন। যখন আমার কিছু করার ছিল না।
তবে সনদবিহীন ভুয়া চিকিৎসকেন দৌরত্ব এতটায় বৃদ্ধি পেয়েছে যে তাদের লাগাম টেনে ধরা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাদের অপচিকিৎসার কারনে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভুক্তভোগী ঐই খামারী পল্লী পশু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।