আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে সুন্দরবনের

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়ার এলাকায় লাগা আগুন রবিবার (৫ মে) বিকেলের দিকে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু স্থানে পাতার স্তূপ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে তা নিভিয়ে ফেলা হচ্ছিল।

আগুন আর ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী নুরুল করিম।
কাজী নুরুল করিম জানান, সকালেই ঘটনাস্থলে একযোগে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে বনরক্ষী, ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার। শুরুতেই নৌবাহিনীর মোংলা ঘাঁটির লে. কমান্ডার আরফাতুল আরেফিনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি ফায়ার ফাইটিং টিম আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়ে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পাশের ভোলা নদী থেকে পানি ওঠানোর জন্য পাইপ সংযোগ দেন। তবে নদীতে জোয়ার না থাকায় পানি সরবরাহে দেরি হয়।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন লাগার সঠিক কারণের প্রতিবেদন জমা দেবে এই কমিটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুন্দরবনের আগুন লাগা এলাকার পার্শ্ববর্তী একাধিক ব্যক্তি বলেন, অবৈধভাবে সুন্দরবনে যারা মধু আহরণ করতে যান তাদের কাছ থেকেই আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাটের উপপরিচালক মামুন আহমেদ জানান, সকালেই সুন্দরবনের আগুন নেভাতে তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। এর মধ্যে মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলার তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করে। বাকি দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়। শুকনো পাতা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলেও আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।

আগুন নেভানোর কাজে বনরক্ষীদের পাশাপাশি অন্যরা কাজ করছেন জানিয়ে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী নুরুল করিম বলেন, শনিবার নানা প্রতিকূলতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যায়নি। তবে আজ সকালে এ কাজ শুরু হয়। এতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগ দিয়েছে। এলাকাবাসীও সব রকমের সহযোগিতা করছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে বলেও জানান বন বিভাগের এই কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএফও বলেন, কী কারণে, কীভাবে আগুন লেগেছে তার সঠিক কারণ এখনো বের করা যায়নি। তবে স্থানীয়রা একেকজন একেক তথ্য দিচ্ছেন। সব তথ্য আমলে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া টহল ফাঁড়িসংলগ্ন বনাঞ্চলে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *