চট্টগ্রামে যুবলীগের কর্মীকে পেটানো ও হত্যার হুমকির অভিযোগে কাউন্সিলর টিনু কারাগারে..!

চট্টগ্রামে যুবলীগের এক কর্মীকে ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে পেটানো ও হুমকির অভিযোগে করা মামলায় এক কাউন্সিলরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম নুর মোস্তফা ওরফে টিনু। তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন।
নুর মোস্তফার আইনজীবী রিদুয়ানুল হক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, নুর মোস্তফা এ ঘটনায় জড়িত নন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। নির্দোষ দাবি করে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তা নামঞ্জুর করে নুর মোস্তফাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নিজেকে যুবলীগ নেতা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একজন মন্ত্রীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন নুর মোস্তফা। নির্বাচিত কাউন্সিলরের মৃত্যুর পর ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে নুর মোস্তফা ৭৮৯ ভোট পেয়ে জয়ী হন। মারধরের শিকার মেহেদী হাসান রাকিব চকবাজার এলাকায় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক উপকমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনির অনুসারী।
৩ মার্চ রাতে যুবলীগ কর্মীকে তুলে চকবাজার ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। রাতেই তিনি কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে কাউন্সিলরসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০–১৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় বলা হয়, ঘটনার দিন রাত
৮টায় দিকে বাদী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে তাঁর এক বন্ধুর ফার্মেসিতে বসা ছিলেন। এ সময় কাউন্সিলর নুর মোস্তফা তাঁর বন্ধুকে মুঠোফোনে কল করে কথা বলতে থাকেন। নিজের মুঠোফোনে অন্যজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন রাকিবও। কণ্ঠস্বর শুনে নুর মোস্তফা রাকিবের বন্ধু অভিজিতের কাছে তাঁর পাশে থাকা ব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। রাকিবের নাম শুনে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং তাঁর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তখন নুর মোস্তফা বাদীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মেডিকেলে তোর কাজ কী, তুই মেডিকেলে যাস কেন? আমি বললাম, এখানে আমার ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। উনি বললেন, কী ব্যবসা আছে, ডকুমেন্ট এনে আমাকে দেখাবি। আমি অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে বলেন, তুই আমার নামে মানুষজনকে কী বলিস সব আমার কানে আসে, আমি কী করতে পারি, তুই দেখ।’
বাদীর কাছে এই কথোপকথন রেকর্ড রয়েছে বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করেন।
মামলায় আরও বলা হয়, কথোপকথনের কয়েক মিনিটের মধ্যে পাঁচ-ছয়টি মোটরসাইকেলে করে ১৫-২০ জন যুবক ফার্মেসির সামনে আসেন। তাঁকে তুলে কাপাসগোলা এলাকায় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাউন্সিলর বসা ছিলেন। রাকিবকে চেয়ারে বসিয়ে কয়েকজন ‍যুবক ঘিরে ধরেন এবং কাউন্সিলর তাঁকে মারধর করেন।
২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নগরের কাপাসগোলা এলাকার বাসা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন নুর মোস্তাফা টিনু । সেই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। পরে জামিনে বের হন। নুর মোস্তাফার বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অস্ত্র আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *