শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাইদ ঘাট মাঠের আলুচাষিরা

সুজন বিশ্বাস বাঘারপাড়া (প্রতিনিধি) যশোর

রোজ শনিবার ১৭/২/২৪ ইং সকাল ৮ঘটিকায় যশোর জেলার গাইদ ঘাট মাঠে সরো জমিনে গিয়ে দেখা যায় শেষ মুহূর্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন আলু চাষিরা, গত বছরের লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি মৌসুমে ব্যাপকহারে আলুর চাষ করেছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা,, বৈরি আবহাওয়ার কবলে না পড়লে এবার আলুর বাম্পার ফলনের আশা করছেন জেলার ৮নং উপজেলার আলু চাষিরা, উৎপাদন ভালো হওয়ার পাশাপাশি ন্যায্য দামও পাওয়ার আশা তাদের।

গত মৌসুমে আলুর ফলন বিপর্যয় ও দাম না পেয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়লেও আগের অভিজ্ঞতা ভুলে এবছরও বিপুল পরিমাণ জমিতে নতুন করে আলু চাষ করেছেন গাইদ ঘাট মাঠের চাষিরা এছাড়া যশোরের মাটি আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় জেলার ৮নং উপজেলা তেই ব্যাপক আলুর চাষ হয়েছে।

অপর দিকে উপজেলার খাজুরা, খানপুর, পাইক পাড়া সহ কয়েকটি এলাকার মাঠজুড়ে যে দিকে চোখ যাবে সেদিকে শুধু দেখা যায় আলুর ক্ষেত।এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে হওয়ায় আলুর ফলনও ভালো হয়েছে। তবে ক্ষেত থেকে আলু উত্তলনের সময় কাঙ্ক্ষিত দাম পাবেন কি না তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় চাষিরা,, গাইদ ঘাট মাঠের আলু চাষি প্রশান্ত বিশ্বাস জানান, খারাপ আবহাওয়া ও আলুর বাজারদর কম থাকায় গেলবার চাষিদের বিঘাপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকালোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর বেড়েছে সার, কীটনাশকের ও শ্রমের ব্যয়। সঙ্গে যোগ হয়েছে বীজের উচ্চ দামও। সব মিলিয়ে হেক্টরপ্রতি এবারের উৎপাদন ব্যয় ৪০ /৫০ হাজার টাকা। তাই সামনে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে ভবিষ্যতে আলু চাষ করবেন কি না সে বিষয়েও তাদের ভাবিয়ে তুলছে। আর ১০/১৫দিন গেলেই এসব জমি থেকে তোলা হবে আলু। ইতিমধ্যে কিছু কিছু জমির আলু বাজারে তোলা হয়েছে। দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, এখন বাজারে আলুর দাম ভালো থাকলেও সামনে আলু তোলার উপযুক্ত সময়ে দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য ইতিমধ্যে আমরা আলু সংরক্ষণের জন্য জেলার কোল্ডস্টোরেজগুলোতে যোগাযোগ করছি। কিন্তু সেখানে ব্যবসায়ীরা আগেভাগেই বুকিং দেওয়ায় আমাদের মতো প্রান্তিক চাষিরা কোনো সুযোগ পাচ্ছেনা।
একই এলাকার কৃষক সাঈদ শেখ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত কয়েক বছর ধরে তারা আলু চাষে লোকসান করে আসছেন। তবে এ মৌসুমে আলু চাষের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া হওয়ায় ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।এছাড়া আরো কৃষক গণেরা বলেন, এক বিঘা জমিতে আলু চাষে যে পরিমাণ খরচ হয় সে তুলনায় বাজারে আলুর দাম পাওয়া যায় না। আলুর দাম যদি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা হয় তাহলে আমরা লাভবান হব। কিন্তু আমরা দাম পায় থেকে ৪০০/৫০০টাকা। সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। এজন্য চাষকে লাভজনক করে তুলতে আলুর দাম বৃদ্ধি করার দাবি জানান তারা।

যশোর কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানা যায় এবছর যশোরে আলুর বাম্পার ফলন হবে। চলতি মৌসুমে যশোর জেলায় ২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে। অন্যান্য বছরে আলু ক্ষেতে ভাইরাস রোগের প্রকোপ দেখা দিলেও এবছর তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি কৃষককে যেকারণে কৃষককে অনেকটা আশাবাদী মনে হয়েছে,, এছাড়া যশোরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, শীতের সবজি আলু। শীত বাড়াতে আলুর ফলনও ভাল হয়। জেলার আট উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন আলুর আবাদ। এ জেলায় কার্ডনাল, ডাইমনসহ বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় রেকর্ড সংখ্যক জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। এছাড়া চৌগাছা, ঝিকরগাছা, মনিরামপুরসহ অন্য সব উপজেলাতেও আলুর আবাদ ভালো হয়েছে। সামনে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে কৃষক আলুতে লাভের মুখ দেখবেন বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *