নওগাঁয় ১২০টাকায় চাকরি ৬৫ জনের

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধ

নওগাঁয় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৫ ও নারী ১০ জন। বুধবার রাতে নিয়োগপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ ও তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক।

পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেন মোট ২২৩১ জন প্রার্থী। প্রথম ধাপে শারীরিক পরীক্ষায় ১১১৫ জন উত্তীর্ণ হন। দ্বিতীয় ধাপে ২০০ মিটার দৌঁড়, পুশ আপ, লং ও হাই জাম্প পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৭৯০ জন। তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৬০০ মিটার দৌঁড়, ড্রাগিং ও রোপ ক্লাইম্বিং পরীক্ষায় ৫৪৫ জন উত্তীর্ণ হন। গত ৬ মার্চ চতুর্থ ধাপে লিখিত পরীক্ষায় ২২০ জন মনোনীত হন।

সর্বশেষ মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়, যাতে ৬৫ জন প্রাথমিকভাবে মনোনীত হন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে সাধারণ কোটায় ৩৫, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১১, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ৩, পুলিশ পোষ্য কোটায় ০৫ ও আনসার কোটায় ০১জনসহ মোট ৫৫ জন পুরুষ রয়েছেন। আর নারীদের মধ্যে সাধারণ কোটায় ০৯ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় ০১ জনসহ ১০ জন চাকরি পেয়েছেন।

নিয়োগপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এর আগের নিয়োগ পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও টাকা না থাকায় চাকরি পাননি তারা। তবে এবার মাত্র ১২০ টাকা খরচ করেই চাকরি পেয়েছেন। কোনো রকম তদবির বা অর্থ লেনদেন ছাড়াই বাছাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অভিভাবকরাও স্বপ্নের মতো দেখেছেন বিষয়টি।প্রশাসনের যদি এরকম কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। তাহলে চাকরির নামে যে ঘোষের প্রথা তা চিরতরে বিলীন হবে বলে মনে করেন সুপারিশ প্রাপ্তরা।

শিক্ষার্থী মো. সজিব আখি আক্তার বলেন, আমাদের বাবা শ্রমজীবি। শ্রমিকের কাজ করে। অনেক কষ্ট করে আমাদের পড়াশোনা করিয়েছেন। আজকে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পুলিশের চাকরি পেয়ে অনেক আনন্দিত আমরা। আমি সবার কাছে দোয়া চাই। আমিও যেন মানুষের সেবা করতে পারি পুলিশের চাকরি করে।তিনি আরো বলেন যেহেতু আমি বিনা টাকা চাকরি পেয়েছি। আমার কাছের সেবাও হবে নিশ্চয় এবং বিনা খরচায়।

পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে আজকের চাকরি পেল ৬৫ তরুণ-তরুণী।

যারা আজকে নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতা ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ দিতে হয়নি। তাদের মাত্র আবেদন করতে যে খরচ হয়েছে ১২০ টাকা, সেটিই তাদের খরচ।

সরকারের জন্য মেধাবী ও দক্ষ পুলিশ জনবল নিশ্চিত করতে পেরে ভালো লাগছে। এসব মেধাবীরা দ্রুত পুলিশের বিভিন্ন কৌশল ও পাঠগুলো আয়ত্ত করতে পারবে। এতে আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ পুলিশ বিভাগ গড়ে উঠবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *