চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছে গাছে ভরে গেছে আমের মুকুল

মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি

পৌষেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাছে গাছে আমের মুকুল ফুটছে। গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাত, লক্ষণভোগসহ বেশকিছু গুটি আমের গাছে মুকুল আসছে। মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষি ও বাগান মালিকরা। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় মুকুলে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক ছিটাচ্ছেন তারা।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলার ইসলামপুর, সুন্দরপুর, রানিহাটি, শিবগঞ্জ, কানসাট, চককীত্তি, শ্যামপুর, খাষেরহাট, মনাকষা, মোবারকপুর, দুর্লভপুর, ভাঙ্গাব্রিজ, দাইপুকুরিয়া, চরধরনপুর, গোহালবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের আমচাষি শাহীন আকতার ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে থেকে লক্ষণভোগসহ কয়েক জাতের গুটি আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। তাই কীটনাশক দিয়ে স্প্রে করছি। যেন মুকুলগুলো নষ্ট না হয়। বাগানে লক্ষণভোগ, গোপালভোগ, ফজলি, আশ্বিনা, বারি-৪, ল্যাংড়াসহ বেশ কয়েক জাতের আম গাছ আছে। গত বছর থেকে এবার আম গাছের অবস্থা ভালো আছে। আশা করছি ভালো ফলন হবে।

শিবগঞ্জ উপজেলার আমচাষি এনামুল হক বলেন, গাছে মুকুল দেখে তিন দিন ধরে গাছে স্প্রে করছি। তবে সব গাছে মুকুল আসেনি। কিছু গুটি জাতের আম গাছে মুকুল এসেছে। বাগানে সেচও দিতে হবে।

চাঁদপুর এলাকার একটি আম বাগানে সেচ দিচ্ছেন চাষি মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরে এ এলাকা বৃষ্টি হয়নি। আর হিমেল বাতাস বইছে। আম গাছের গোঁড়া শুকিয়ে গেছে। হালকা বৃষ্টি হয়েছে তাই সেচ দিতে হচ্ছে যেন গাছের গোড়া শুকিয়ে না যায়। এখানে আমার অনেক ফজলি আমের গাছ আছে। মুকুল এখনো তেমন আসেনি। তবে আশার করছি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মুকুলে ছেয়ে যাবে।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম ভোরের চেতনাকে বলেন, জেলার গুটি গাছগুলোতে আগাম মুকুল আসতে শুরু করেছে তবে জাত আম গাছগুলোতে এখনো সেভাবে মুকুল আসেনি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করা যাচ্ছে আগামী ১/২ সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি মুকুল আসবে । তিনি আরো বলেন, গত দুই দিনের এই হালকা বৃষ্টি আম চাষিদের জন্য অত্যন্ত জরুরী ছিল তা না হলে বাগানে খরচ করে ছেচ দেওয়া লাগতো, বৃষ্টির পর এ মুকুল দেখে চাষিরা বাগান পরিচর্যা শুরু করেছেন। আশা করছি জেলার সব বাগানে মুকুল আসবে। করণ গত বছর সব বাগানেই মুকুল কম ছিল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, এবছর জেলায় আম চাষ হয়েছে ৩৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে, জেলার আম গাছ গুলোতে ৩৫/৪০% মুকুল এসেছে । এ সময়ে সাধারণত ৬০/৭০% এসে যায় দীর্ঘ সময় শীতের কারণে এবছর একটু কম মুকুল এসেছে , তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী ১/২ সপ্তাহের মধ্যে আরো কিছুটা মুকুল আসবে। গত দুই দিন আগে হালকা বৃষ্টি হওয়ায় মুকুলের পাশাপাশি জালিপাত গজানোর সম্ভাবনা রয়েছে তাই পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল ও জালিপাত বাঁচাতে একটি কীটনাশক দিয়ে স্প্রের পরামর্শ দিচ্ছি চাষিদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *